জাকির সিকদার :ঢাকার নিকটেই সাভারের ধামরাই ও মানিকগঞ্জ এখানে শুরু হতে চলছে পঞ্চম দফার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমায় বাধা দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছিড়ে ফেলে মারপিট ও আটকে রেখে প্রাণনাশসহ বিভিন্ন হুমকি-দামকি দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন এই সকল কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতরা। এ সকল ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সচিব, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিতভাবে পৃথক অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবীর ও ভূক্তভোগী দুই প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন- বিএনপি মনোনীত দিঘী ইউনিয়নে মো. মতিউর রহমান ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে হাজী মো. আদম আলী। মতিউর রহমান জানান, গত বুধবার দুপুর দুইটার দিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গেলে অজ্ঞাতনামা
৫০-৬০ যুবক তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থা কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখেন। এরপর ট্রেজারি চালান ছিনিয়ে নিয়ে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তারা। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে তাকে নানা ভয়ভীতি দেখান তারা। নৌকা প্রতিক ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন ওই যুবকরা। হাজী মো. আদম আলী জানান, গত বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তিনি বাসে গিলন্ড যাওয়ার পথে ১০-১৫ অজ্ঞাতনামা যুবক মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিক্সা নিয়ে এসে গতিরোধ করেন। বাস থেকে তাকে টেনে-হেচড়ে নামিয়ে কিলঘুষি ও মারপিট করে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে ভয়ভীতি এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন তারা। ট্রেজারি চালান ও মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলে জেলা ক্রীড়া সংস্থা কার্যালয়ে নিয়ে তাকে আটকে রাখেন। পরে পরিচিত এক চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সেখান থেকে ছাড়া পান তিনি।
জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক এসএ জিন্নাহ জানান, গত ২০ এপ্রিল থেকে কিছু সন্ত্রাসী জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় এবং আশাপাশের পথে পাহারা দিচ্ছেন। মনোনয়ন সংগ্রহ করতে আসা আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছাড়া অন্য চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীদের নানা হুমকি ও বাধা দিচ্ছেন তারা। আগামী সোমবার নির্ধারিত দিনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ যাতে জমা দিতে না পারে এজন্য মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলেছেন ওই সন্ত্রাসীরা। এসব ঘটনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে গত বুধবার লিখিভভাবে তিনিসহ ভূক্তভোগী ওই দুই প্রার্থী পৃথক অভিযোগ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
জেলা বিএনপি সভাপতি আফরোজা খান রিতা সাংবাদিকদের জানান, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় মানিকগঞ্জের ৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবচে’ বেশি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে।
পঞ্চম দফায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের সংসদীয় এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে বিএনপির অবস্থান ভালো। এ কারণে তার লোকজন যে কোনভাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচন করতে বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর যাদের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলা হয়েছে, তারা আবেদন করলে পুনরায় তা দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগের কাগজ হাতে পেলে খোঁজ-খবর নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।